স্বামীর কোন ‘পাশে’ স্ত্রীকে ঘুমাতে হয় জানেন? দেখে নিন কি বলছে বাস্তশাস্ত্র!

Spread the love

স্বামীর কোন ‘পাশে’ স্ত্রীকে ঘুমাতে হয় : বাস্তুশাস্ত্র শুধু একটি প্রাচীন বিজ্ঞান নয়, এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। বিশেষ করে বিবাহিত দম্পতিদের জন্য বাস্তুশাস্ত্রের কিছু নিয়ম মেনে চললে সংসারে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় থাকে। এই নিয়মগুলি শুধু আধ্যাত্মিক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং মনস্তাত্ত্বিক এবং বৈজ্ঞানিকভাবেও কার্যকর।

এই প্রতিবেদনে আমরা বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী বিবাহিত দম্পতিদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম ও টিপস আলোচনা করব, যা সংসারে ভালোবাসা, সুখ ও সৌভাগ্য বৃদ্ধি করতে সহায়ক হতে পারে।

বাস্তুশাস্ত্র মতে, স্বামী-স্ত্রীর শোবার ঘর যদি সঠিক দিকে হয়, তবে তা তাঁদের দাম্পত্য সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করে এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়ায়।

দাম্পত্য ঘর দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে হলে তা সর্বোত্তম বলে ধরা হয়। এটি সম্পর্কের স্থায়িত্ব ও ভালোবাসা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
দক্ষিণ বা পশ্চিম দিকে শোবার ঘর থাকলেও তা শুভ ফল প্রদান করে।
উত্তরের দিকে দাম্পত্য কক্ষ হলে কলহের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

উত্তর-পূর্ব দিকে শোবার ঘর থাকলে তা দাম্পত্য জীবনে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকের শোবার ঘর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মতানৈক্য বাড়ায়।

বিছানা সবসময় এমনভাবে স্থাপন করা উচিত, যাতে স্বামী-স্ত্রী দক্ষিণ বা পূর্ব দিকে মাথা রেখে ঘুমান।
কাঠের তৈরি বিছানা সর্বোত্তম, কারণ এটি ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি করে।
বিছানার নিচে অতিরিক্ত জিনিসপত্র জমিয়ে রাখা উচিত নয়।

লোহার তৈরি বা ধাতব বিছানা এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এটি দাম্পত্য জীবনে নেতিবাচক শক্তি সৃষ্টি করে।
উত্তর দিকে মাথা রেখে ঘুমানো নিষেধ, কারণ এটি দাম্পত্য জীবনে অশান্তি আনতে পারে।

বাস্তুশাস্ত্র মতে, দাম্পত্য কক্ষের রং দম্পতির সম্পর্কের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।

হালকা গোলাপি, লালচে, আকাশি ও সাদা রং দাম্পত্য জীবনে সুখ ও ভালোবাসা বৃদ্ধি করে।
হালকা সবুজ বা ক্রিম রং শান্তি ও ইতিবাচক শক্তি নিয়ে আসে।

গাঢ় কালো, ধূসর, গাঢ় নীল বা গাঢ় বাদামি রং দাম্পত্য জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
খুব উজ্জ্বল বা ঝলমলে রংও সম্পর্কের মধ্যে অস্থিরতা আনতে পারে।

শোবার ঘরে আয়না না রাখাই ভালো, তবে থাকলে এমনভাবে রাখা উচিত, যাতে এতে দম্পতির প্রতিচ্ছবি না পড়ে।
শোবার ঘরে ইলেকট্রনিক গ্যাজেটস কম রাখলে ভালো, কারণ এগুলো সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে পারে।

আয়না কখনওই বিছানার সামনে রাখা উচিত নয়, কারণ এটি দাম্পত্য জীবনে অশান্তি আনতে পারে।
টিভি, ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোন বেশি ব্যবহার করলে দাম্পত্য সম্পর্কে মনোযোগ কমে যেতে পারে।

বাস্তুশাস্ত্র মতে, শোবার ঘরে তাজা ফুল রাখা ভালোবাসা ও সৌভাগ্য বৃদ্ধি করে।
গোলাপ, জুঁই বা চন্দ্রমল্লিকা ফুল শুভ লক্ষণ বহন করে। ঘরে হালকা সুগন্ধি ব্যবহার করা শুভ ফল দেয়।

গোলাপি বা লাল রঙের ক্রিস্টাল ঘরের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রাখলে তা সম্পর্কের উষ্ণতা বৃদ্ধি করে।

শোবার ঘরের মধ্যে জল সংক্রান্ত ছবি বা ফোয়ারা রাখা এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি সম্পর্কের অস্থিরতা বাড়ায়।

অনেকে শোবার ঘরে অতিরিক্ত জিনিসপত্র জমিয়ে রাখেন বা বিছানার নিচে পুরনো জিনিস রাখেন। এটি বাস্তুদোষ সৃষ্টি করতে পারে এবং দাম্পত্য জীবনে অশান্তি ডেকে আনতে পারে।

ঘর সবসময় পরিষ্কার ও গোছানো রাখা উচিত।
বিছানার নিচে কোনও ভাঙা জিনিস বা জুতো রাখা উচিত নয়।

বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে, দম্পতির হাস্যোজ্জ্বল ছবি ঘরের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রাখলে সম্পর্ক আরও মধুর ও সুখময় হয়।

একা থাকা বা দুঃখজনক মুহূর্তের ছবি শোবার ঘরে রাখা উচিত নয়।
জলপ্রপাত বা যুদ্ধের ছবি দাম্পত্য জীবনে অশান্তি আনতে পারে।

স্বামীর কোন ‘পাশে’ স্ত্রীকে ঘুমাতে হয়:

বাস্তুশাস্ত্র শুধু একগুচ্ছ নিয়ম নয়, এটি আমাদের জীবনযাত্রাকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে এবং সংসারে সুখ ও শান্তি বজায় রাখতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাস্তু নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন।

  1. স্ত্রী স্বামীর বাঁ পাশে ঘুমাবেন।
  2. শোবার ঘর দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রাখুন।
  3. ঘরের রং হালকা গোলাপি, সাদা বা আকাশি রাখুন।
  4. আয়না বিছানার সামনে রাখবেন না।
  5. বিছানার নিচে অপ্রয়োজনীয় জিনিস জমিয়ে রাখবেন না।
  6. শোবার ঘরে টিভি বা মোবাইল কম ব্যবহার করুন।
  7. ঘরের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে দম্পতির হাস্যোজ্জ্বল ছবি রাখুন।

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য শুধু ভালোবাসা বা বোঝাপড়া যথেষ্ট নয়, তাঁদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাও গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই জানেন না যে, ঘুমানোর অবস্থান ও দিক ঠিক রাখা দাম্পত্য সুখ ও সৌভাগ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। বাস্তুশাস্ত্র মতে, স্বামী-স্ত্রীর ঘুমানোর দিক ও পদ্ধতি নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চললে সংসারে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় থাকে।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে—স্বামী-স্ত্রী কীভাবে ঘুমাবেন? স্ত্রীর কোন দিকে শোওয়া উচিত? ঘরের দিক কীভাবে হওয়া উচিত? এই প্রতিবেদনে আমরা বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী স্বামী-স্ত্রীর ঘুমানোর সঠিক দিক ও নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে, স্ত্রীকে সবসময় স্বামীর বাঁ পাশে ঘুমানো উচিত। এটি শুধুমাত্র একটি ঐতিহ্যগত বিশ্বাস নয়, বরং এর পেছনে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক ও ধর্মীয় ব্যাখ্যাও রয়েছে।

স্ত্রীকে সবসময় স্বামীর বাঁ পাশে ঘুমানো উচিত

বাস্তুশাস্ত্র মতে, স্ত্রী যদি স্বামীর বাঁ পাশে ঘুমান, তাহলে তাঁদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়। এতে পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি পায় এবং সম্পর্কের গভীরতা বাড়ে।

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা ও মানসিক সংযোগ আরও দৃঢ় হয়। সংসারে কলহের পরিমাণ কমে এবং উভয়ের প্রতি শ্রদ্ধা বৃদ্ধি পায়।

বাস্তুশাস্ত্র মতে, স্ত্রীর বাঁ পাশে ঘুমালে স্বামীর আর্থিক উন্নতি হয়, তাঁর কর্মজীবনে সাফল্য আসে এবং সৌভাগ্য বৃদ্ধি পায়।

এই অবস্থানে ঘুমালে স্বামীর সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে, রোগব্যাধি কম হয় এবং তিনি দীর্ঘায়ু লাভ করেন।

হিন্দু ধর্মে শুভ কাজের সময় স্ত্রীকে স্বামীর বাঁ পাশে বসানো হয়। বিয়ের সময়ও কনেকে বরের বাঁ পাশে বসতে বলা হয়। এটি শুভ লক্ষণ বলে বিবেচিত হয়। তাই ঘুমানোর ক্ষেত্রেও এই নিয়ম পালন করা হলে তা শুভ ফল বয়ে আনে।

শুধু ঘুমানোর দিকই নয়, শোবার ঘর ও বিছানার অবস্থানও বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা উচিত।

স্বামী-স্ত্রীর শোবার ঘর দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে হওয়া উচিত। এটি সংসারে সুখ, সমৃদ্ধি ও সুস্থতা বজায় রাখে।

বিছানা কাঠের তৈরি হওয়া উচিত। ধাতব বা লোহার বিছানায় ঘুমালে নেতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি পায়, যা সম্পর্কের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
ভাঙা বা পুরনো বিছানায় ঘুমানো উচিত নয়। এটি দাম্পত্য জীবনে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
বিছানার চাদর হালকা রঙের হওয়া উচিত।সাদা, হালকা গোলাপি বা হালকা সবুজ রঙ শুভ ফল দেয়।

স্বামী-স্ত্রীর মাথা উত্তর দিকে রেখে ঘুমানো উচিত নয়। এতে দাম্পত্য জীবনে অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে।
পূর্ব বা দক্ষিণ দিকে মাথা রেখে ঘুমানো সর্বোত্তম। এটি শারীরিক ও মানসিক শান্তি আনে।

স্বামী-স্ত্রীর একই বিছানায় ঘুমানো উচিত। আলাদা ঘরে বা আলাদা বিছানায় ঘুমানো তাঁদের সম্পর্কে দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে।
.
অনেকেই বিছানার নিচে পুরনো জিনিসপত্র, জুতো বা অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় বস্তু রেখে দেন। এটি দাম্পত্য জীবনে নেতিবাচক শক্তি সৃষ্টি করতে পারে।

বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে, আয়না বিছানার সামনে বা পাশে থাকলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহের সৃষ্টি হতে পারে। এটি এড়িয়ে চলা উচিত।

পুরনো ও নোংরা চাদর নেতিবাচক শক্তির সৃষ্টি করে। তাই নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বিছানা ব্যবহার করা উচিত।

বাস্তুশাস্ত্রের অনেক নিয়মই আসলে আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ঘুমের সময় স্ত্রীর বাঁ পাশে থাকা:


স্ত্রী যদি স্বামীর বাঁ পাশে থাকেন, তাহলে স্বামীর হৃদপিণ্ডের সংস্পর্শে স্ত্রীর শরীর আসে, যা মানসিক প্রশান্তি দেয় এবং সম্পর্কের মধ্যে উষ্ণতা বাড়ায়।

দক্ষিণ দিকে মাথা রেখে ঘুমানো:


আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণ দিকে মাথা রেখে ঘুমালে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় এবং মানসিক চাপ কমে।

বিছানার নিচে কিছু না রাখা :


এটি শুধু বাস্তুশাস্ত্র নয়, স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের দৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ঘর ও বিছানা স্বাস্থ্যকর ঘুম নিশ্চিত করে।

স্বামী-স্ত্রীর সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য শুধু ভালোবাসাই যথেষ্ট নয়, সঠিক জীবনযাত্রা ও নিয়ম-কানুন মেনে চলাও জরুরি। বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী স্বামীর বাঁ পাশে স্ত্রী ঘুমালে তাঁদের মধ্যে ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়, স্বামীর সৌভাগ্য বাড়ে এবং সংসারে শান্তি বজায় থাকে।

এছাড়া, শোবার ঘর ও বিছানার দিকনির্দেশনা মেনে চললে দাম্পত্য জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি আসে। তাই, বাস্তুশাস্ত্রের এই নিয়মগুলি মেনে চললে দাম্পত্য জীবন হবে মধুর, সুস্থ ও সৌভাগ্যময়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *