রুক্মিণীর সঙ্গে শুভশ্রীর রেষারেষি চরমে! মহা বিরক্ত দেব! কী হল জানেন?

Spread the love

টলিউডে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ‘বিনোদিনী’। একদিকে রুক্মিণী মৈত্র অভিনীত বিনোদিনী কিছুদিন আগেই মুক্তি পেয়েছে, অন্যদিকে নতুন করে আরও একটি ‘বিনোদিনী’ সিনেমার ঘোষণা হয়েছে, যেখানে মুখ্য চরিত্রে থাকছেন শুভশ্রী গাঙ্গুলী। আর এই ঘোষণার পর থেকেই জল্পনা তুঙ্গে – দুই নায়িকার মধ্যে কি তবে এক অঘোষিত প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেল?

রুক্মিণীর ‘বিনোদিনী’ ও দেবের প্রতিক্রিয়া

রাম কমল মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় বিনোদিনী কিছুদিন আগেই মুক্তি পেয়েছে। এই সিনেমার প্রযোজক দেব, আর মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন তার বর্তমান প্রেমিকা রুক্মিণী মৈত্র। সিনেমাটি মুক্তির পর থেকেই দর্শকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, তবে দেবের প্রযোজনায় এটি বড় বাজেটের ছবি হিসেবে প্রচুর চর্চায় ছিল।

এদিকে যখন পরিচালক সৃজিত মুখার্জি ঘোষণা করলেন যে তিনি আরও একটি ‘বিনোদিনী’ নিয়ে সিনেমা বানাবেন, যেখানে মুখ্য চরিত্রে থাকবেন শুভশ্রী গাঙ্গুলী, তখন থেকেই দুই নায়িকার মধ্যে তুলনা শুরু হয়ে যায়। কারণ শুভশ্রী শুধু দেবের প্রাক্তন প্রেমিকাই নন, তিনি টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকাও। দেবের কাছে যখন এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়, তখন তার বিরক্তি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, “আমার কাছে একটাই বিনোদিনী, যেটা মুক্তি পেয়েছে। অন্যটা আমি জানি না।”

সৃজিতের নতুন ‘বিনোদিনী’ ও প্রযোজকের মন্তব্য

সৃজিতের নতুন সিনেমার নাম হবে ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’। এটি মূলত একটি ঐতিহাসিক পটভূমিতে নির্মিত সিনেমা, যেখানে বিনোদিনীর গল্পও উঠে আসবে। এই ছবির প্রযোজক রানা সরকার স্পষ্ট করে বলেছেন, এটি শুধুমাত্র বিনোদিনীর জীবনীভিত্তিক ছবি নয়, বরং এর গল্পে আরও অনেক কিছু থাকবে।

রানা সরকারের মতে, “আমাদের ছবিটা কিন্তু কেবল বিনোদিনীকে নিয়ে নয়। ছবির একটা অংশে বিনোদিনী থাকবেন, আর সেই চরিত্রে অভিনয় করবেন শুভশ্রী। আমরা অনেক আগেই এই ছবির পরিকল্পনা করেছিলাম, কিন্তু যখন রাম কমল তার সিনেমা ঘোষণা করেন, তখন আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের কাজ স্থগিত রাখি। যাতে একসঙ্গে দুই বিনোদিনী দর্শকদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করে।’’

তবে প্রশ্ন উঠছে, সত্যিই কি এই সিনেমা আগেই পরিকল্পিত ছিল, নাকি রুক্মিণীর ‘বিনোদিনী’ মুক্তির পর পরিকল্পিতভাবে নতুন ‘বিনোদিনী’ আনা হচ্ছে?

দুই নায়িকার প্রতিযোগিতা নিয়ে আলোচনা

টলিউডের ভেতরের খবর, রুক্মিণী ও শুভশ্রীর মধ্যে বরাবরই একপ্রকার ঠান্ডা প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে। একসময় দেব ও শুভশ্রীর প্রেম ছিল, পরে তাদের ব্রেকআপ হয়, এবং এরপর দেব-রুক্মিণীর সম্পর্কের শুরু হয়। তাই দেবের প্রাক্তন ও বর্তমান প্রেমিকার মধ্যে তুলনা হওয়াটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু যখন একই ধরনের চরিত্রে দু’জন নায়িকা অভিনয় করছেন, তখন এই প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হয়ে উঠবে, সেটাই স্বাভাবিক। শুধু তাই নয়, টলিউডের অনেকে মনে করছেন, দুই নায়িকার মধ্যে ব্যক্তিগত প্রতিদ্বন্দ্বিতার ছায়া এখন পেশাদার জীবনেও এসে পড়েছে। রুক্মিণীর ‘বিনোদিনী’ যেখানে দেবের প্রযোজনায় তৈরি, সেখানে শুভশ্রীর ‘বিনোদিনী’ সৃজিতের পরিচালনায় আসছে। এবং সৃজিত হচ্ছেন শুভশ্রীর স্বামী। অর্থাৎ দুই পক্ষের সিনেমাই এক ধরনের ব্যক্তিগত সংযোগ বহন করছে।

দর্শকরা কী ভাবছেন?

দর্শকদের মধ্যেও এই দুই সিনেমা নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। একদিকে রুক্মিণীর সিনেমা ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়েছে, আর অন্যদিকে শুভশ্রীর সিনেমার কাজ শুরু হবে কিছুদিনের মধ্যেই। অনেকেই এখন অপেক্ষা করছেন, শেষ পর্যন্ত কোন ‘বিনোদিনী’ বেশি প্রশংসা পাবে?

এছাড়াও অনেকে মনে করছেন, একই সময়ে দুই ‘বিনোদিনী’ আসার ফলে দর্শকদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হবে। তবে কিছু দর্শকের মতে, একই বিষয়বস্তু নিয়ে আলাদা আলাদা দৃষ্টিকোণ থেকে ছবি নির্মাণ হলে তাতে ক্ষতি নেই। বরং ইতিহাসপ্রেমীরা এতে খুশিই হবেন।

রুক্মিণীর ‘বিনোদিনী’ পুরোপুরি তার জীবনের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যেখানে বিনোদিনী দাসীর সংগ্রাম, থিয়েটারের প্রতি তার অবদান, এবং সেই সময়ের সমাজব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

অন্যদিকে শুভশ্রীর সিনেমা শুধুমাত্র বিনোদিনীর জীবননাট্য নয়, এটি একটি বৃহৎ গল্পের অংশ, যেখানে বিনোদিনীর চরিত্র গুরুত্বপূর্ণ হলেও কেন্দ্রীয় নয়।

এই পার্থক্য হয়তো দুই সিনেমার তুলনা কমাতে পারে, কিন্তু দর্শকদের আগ্রহ কমাবে না, তা নিশ্চিত।

দেবের প্রতিক্রিয়া থেকে স্পষ্ট যে তিনি এই তুলনামূলক আলোচনায় বিরক্ত। কারণ তিনি অনেক আগে থেকেই ‘বিনোদিনী’ নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন এবং সেটিকে তার নিজের একটি ড্রিম প্রোজেক্ট হিসেবে দেখেছেন।

এখন যদি একই সময় আরেকটি ‘বিনোদিনী’ সিনেমার কাজ শুরু হয়, তাহলে মানুষ দুই সিনেমার মধ্যে তুলনা করবেই। এবং দেব হয়তো চান না যে তার সিনেমার আলোচনার মধ্যেই নতুন আরেকটি সিনেমা ঢুকে পড়ুক। এছাড়াও, ব্যক্তিগত সম্পর্কের সমীকরণ তো আছেই। শুভশ্রী তার প্রাক্তন প্রেমিকা, যিনি এখন অন্য প্রযোজক ও পরিচালকের সঙ্গে মিলে একই বিষয়বস্তুতে কাজ করছেন। ফলে দেবের বিরক্তি স্বাভাবিক।

দুই নায়িকার মধ্যে এই অঘোষিত প্রতিযোগিতা শুধু ব্যক্তি পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নেই, এটি টলিউডেও প্রভাব ফেলতে পারে।

  • একদিকে দেবের প্রযোজনায় নির্মিত ছবি, যা ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়েছে এবং ভালো ব্যবসা করছে।
  • অন্যদিকে সৃজিত-শুভশ্রীর নতুন সিনেমা, যা এখনো মুক্তির অপেক্ষায়।
  • দুই পক্ষের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরা একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছেন।

এতে টলিউডের নির্মাতাদের মধ্যেও প্রতিযোগিতা দেখা যাচ্ছে। কারণ একই বিষয় নিয়ে একাধিক ছবি হলে দর্শকদের আকর্ষণ কেড়ে নেওয়ার লড়াইও শুরু হয়ে যায়।

শেষ পর্যন্ত দর্শকরাই ঠিক করবেন কোন ‘বিনোদিনী’ তাদের বেশি পছন্দ হয়েছে। রুক্মিণীর সিনেমা ইতিমধ্যেই দেখা হয়ে গেছে, এবার অপেক্ষা শুভশ্রীর সিনেমার জন্য। তবে এই প্রতিযোগিতা যে বিনোদনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, তা বলাই যায়।

দুই ‘বিনোদিনী’র এই লড়াই শেষ পর্যন্ত কীভাবে গড়াবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *