ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক বরাবরই উত্তেজনাপূর্ণ। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর ভারত ও পাকিস্তান দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তবে স্বাধীনতার পর থেকেই এই দুই দেশের মধ্যে নানা বিরোধ, বিশেষ করে কাশ্মীর সমস্যা, তাদের সম্পর্ককে বারবার সংঘাতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ১৯৪৭ সালের পর থেকে একাধিকবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, যার বেশিরভাগই কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে হয়েছে। রাজনৈতিক মতাদর্শ, ধর্মীয় বিভাজন ও ভৌগোলিক সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দ্বন্দ্ব ক্রমশই এই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘটিত উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ ও সংঘর্ষগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৪৭-৪৮ সালের কাশ্মীর যুদ্ধ, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধ, ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধ এবং সাম্প্রতিক পুলওয়ামা সংকট।
স্বাধীনতার পরপরই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রথম যুদ্ধ শুরু হয় কাশ্মীর নিয়ে। ১৯৪৭ সালের অক্টোবর মাসে পাকিস্তান-সমর্থিত উপজাতীয় বাহিনী কাশ্মীর আক্রমণ করে। তখনকার জম্মু ও কাশ্মীরের রাজা হরি সিং ভারতের সঙ্গে সংযুক্তির চুক্তি স্বাক্ষর করেন এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী কাশ্মীরে প্রবেশ করে পাকিস্তান-সমর্থিত বাহিনীকে প্রতিহত করতে শুরু করে। এই যুদ্ধ ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত চলে এবং শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। এর ফলে জম্মু ও কাশ্মীর দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়—এক অংশ ভারতের নিয়ন্ত্রণে এবং অপর অংশ, আজাদ কাশ্মীর, পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই বিভাজন আজও ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মূল কারণ।
১৯৬৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আবারও যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধের মূল কারণ ছিল কাশ্মীর। পাকিস্তানের অপারেশন জিব্রাল্টার নামে একটি পরিকল্পনা ছিল, যার মাধ্যমে তারা কাশ্মীর উপত্যকায় অনুপ্রবেশ করিয়ে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের এই পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেয় এবং পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। দুই পক্ষই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়, এবং শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘ ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। উভয় দেশ ১৯৬৬ সালের জানুয়ারিতে তাশকন্দ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে, যেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে যুদ্ধের আগে যে সীমানা ছিল, তাই পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু এই যুদ্ধের ফলে দুই দেশের মধ্যে তিক্ততা আরও বৃদ্ধি পায়।
১৯৭১ সালের যুদ্ধ ছিল ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ সংঘর্ষ। এই যুদ্ধের মূল কারণ ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (আজকের বাংলাদেশ) পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দমনপীড়ন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরু করে, যার মাধ্যমে তারা বাঙালিদের স্বাধীনতার আন্দোলন দমন করতে চেয়েছিল। গণহত্যা, ধর্ষণ ও অমানবিক নির্যাতনের ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভারত সীমান্তে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। ভারত শুরুতে শরণার্থীদের আশ্রয় দিলেও পরে ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ভারতীয় সেনাবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর সম্মিলিত শক্তির সামনে পাকিস্তানি বাহিনী পরাজিত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। এই যুদ্ধ ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘটনা, কারণ এর ফলে পাকিস্তান তার পূর্ব অংশ হারিয়ে ফেলে এবং ভারত কৌশলগতভাবে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সংঘর্ষ। ১৯৯৮ সালে দুই দেশই পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে নিজেদের সামরিক শক্তি দেখানোর প্রতিযোগিতায় নামে। এরপর ১৯৯৯ সালের মে মাসে পাকিস্তানি সেনা এবং কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কার্গিল সেক্টরে অনুপ্রবেশ করে এবং বেশ কিছু ভারতীয় সামরিক পোস্ট দখল করে নেয়। ভারত তৎক্ষণাৎ প্রতিরোধ শুরু করে এবং কয়েক মাসের তীব্র লড়াইয়ের পর পাকিস্তানি বাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করে। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপ এবং ভারতের কঠোর সামরিক প্রতিক্রিয়ার ফলে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে তাদের বাহিনী ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। এই যুদ্ধ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ককে আরও খারাপ করে তোলে এবং ভবিষ্যতে উত্তেজনার মেঘ আরও ঘনীভূত হয়।
২০১৬ সালে উরি হামলার পর থেকে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও খারাপ হতে শুরু করে। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর দুই দেশের মধ্যে আবার নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় ৪০ জনেরও বেশি ভারতীয় সেনা নিহত হন। এই হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের বালাকোটে একটি বিমান হামলা চালায়, যেখানে তারা দাবি করে যে জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায় এবং দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়। যদিও সরাসরি যুদ্ধ হয়নি, তবে এই ঘটনা প্রমাণ করে যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা যে কোনো সময় ভয়াবহ সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।
ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী, যা তাদের মধ্যে যে কোনো যুদ্ধের ভয়াবহ পরিণতির ইঙ্গিত দেয়। ১৯৯৮ সালে উভয় দেশ পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর পর থেকে আন্তর্জাতিক মহল তাদের সম্পর্কের প্রতি গভীর নজর রাখছে। যদিও দুই দেশই একাধিকবার শান্তি আলোচনা চালানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনার কারণে এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক সবসময়ই জটিল এবং উত্তেজনাপূর্ণ। কাশ্মীর সমস্যা, সন্ত্রাসবাদ, সামরিক প্রতিযোগিতা ও রাজনৈতিক মতভেদ দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্বের মূল কারণ। দুই দেশই একাধিকবার আলোচনা ও শান্তি স্থাপনের চেষ্টা করেছে, তবে প্রতিবারই নতুন কোনো সংকট সেই প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়েছে। যুদ্ধ কখনোই কোনো সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে না, বরং এটি আরও বেশি ধ্বংস ও ক্ষতির কারণ হয়। ভারত ও পাকিস্তান যদি কূটনৈতিকভাবে সমস্যার সমাধানে একমত হতে পারে, তবে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস ও শত্রুতা এতটাই গভীর যে শান্তি স্থাপন করা এখনো বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসেবেই রয়ে গেছে।
ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক শুরু থেকেই জটিল এবং সংঘাতপূর্ণ। ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর ১৯৪৭ সালে দুটি দেশ স্বাধীনতা লাভ করলেও, তাদের মধ্যে তিক্ততা কখনোই কমেনি। এই সম্পর্কের মূল ভিত্তি গঠিত হয়েছে ইতিহাস, ধর্ম, রাজনীতি এবং ভূখণ্ডগত বিরোধের উপর। বিশেষ করে কাশ্মীর ইস্যু ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। যদিও উভয় দেশই শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে, বাস্তবে বারবার সংঘাতের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভ করার পরপরই কাশ্মীর সংকট সৃষ্টি হয়। ব্রিটিশদের চলে যাওয়ার সময় কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত ছিল না। রাজা হরি সিং স্বাধীন থাকার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সশস্ত্র হামলা শুরু হলে তিনি ভারতের সাহায্য চান। এরপর ভারত কাশ্মীরে সেনা পাঠিয়ে অঞ্চলটি নিজেদের দখলে রাখে। পাকিস্তান এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি এবং যুদ্ধ শুরু হয়। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হয়, কিন্তু সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। আজও কাশ্মীর ইস্যু ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রধান সংঘাতের কারণ।
১৯৬৫ সালের যুদ্ধে পাকিস্তান কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করে বিদ্রোহ উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ভারতীয় বাহিনী তাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেয়। যুদ্ধের ফলে উভয় দেশই ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়, এবং শেষ পর্যন্ত তাশকন্দ চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। যদিও চুক্তির ফলে সাময়িক যুদ্ধবিরতি হয়েছিল, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হয়নি। পরবর্তী সময়ে, ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আরেকটি বড় সংঘাত হয়।
১৯৭১ সালের যুদ্ধ ছিল ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তানি বাহিনীর দমনপীড়নের ফলে স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়। লক্ষ লক্ষ মানুষ ভারতে শরণার্থী হয়ে আশ্রয় নেয়। ভারত এই পরিস্থিতিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে এবং ৩ ডিসেম্বর যুদ্ধ শুরু হয়। মাত্র ১৩ দিনের যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী পরাজিত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জন্ম হয়। এটি ছিল ভারতীয় সামরিক ইতিহাসের অন্যতম সাফল্য এবং পাকিস্তানের জন্য সবচেয়ে বড় পরাজয়। এই যুদ্ধের ফলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আরও শত্রুতা বৃদ্ধি পায়।
১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধ দুই দেশের সম্পর্ককে আরও খারাপ করে তোলে। পাকিস্তান লাইন অব কন্ট্রোল অতিক্রম করে কার্গিলের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান নেয়। ভারত এটি জানতে পেরে সামরিক অভিযান শুরু করে এবং কয়েক মাসের মধ্যে পাকিস্তানি বাহিনীকে হটিয়ে দেয়। আন্তর্জাতিক মহলও পাকিস্তানকে চাপে ফেলে, যার ফলে তারা নিজেদের বাহিনী প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। কার্গিল যুদ্ধের ফলে দুই দেশের মধ্যে বিশ্বাস আরও কমে যায় এবং সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।
২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলা ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনাকে নতুন মাত্রা দেয়। এক আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় ৪০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হন, যা ভারতের জন্য বড় ধাক্কা ছিল। এই ঘটনার পর ভারত বালাকোটে বিমান হামলা চালিয়ে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করার দাবি করে। পাকিস্তান পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে এবং একজন ভারতীয় পাইলটকে বন্দি করে। যদিও পরে আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে পাকিস্তান সেই পাইলটকে ছেড়ে দেয়, তবে এই ঘটনার ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়।
ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র, যা তাদের সংঘাতকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। ১৯৯৮ সালে উভয় দেশই পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সামরিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেয়। পারমাণবিক অস্ত্র থাকার কারণে সরাসরি যুদ্ধের আশঙ্কা কম থাকলেও, উভয় দেশের মধ্যে ছোটখাটো সংঘর্ষ প্রায়ই ঘটে থাকে।
উভয় দেশই বহুবার শান্তি আলোচনার চেষ্টা করেছে, কিন্তু প্রতিবারই কোনো না কোনো কারণে আলোচনা ভেস্তে গেছে। ১৯৯৯ সালে লাহোর চুক্তি এবং ২০০১ সালে আগ্রা সম্মেলন শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থ হয়। সন্ত্রাসবাদ, সীমান্ত সংঘর্ষ, রাজনৈতিক মতাদর্শগত পার্থক্য এবং পারস্পরিক অবিশ্বাস দুই দেশের মধ্যে শান্তি স্থাপনকে কঠিন করে তুলেছে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কও বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। উভয় দেশের সাধারণ জনগণ শান্তি চাইলেও রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনার কারণে সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ কমে যায়। পাকিস্তান থেকে ভারতীয় সিনেমা নিষিদ্ধ করা, সীমান্ত বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা, কূটনৈতিক সম্পর্ক কমিয়ে দেওয়া—এসব পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা নষ্ট করেছে।
বর্তমানে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। দুই দেশই সামরিকভাবে শক্তিশালী হলেও, সংঘাত কখনোই কোনো স্থায়ী সমাধান আনতে পারেনি। রাজনৈতিক নেতৃত্ব যদি পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যা এবং সন্ত্রাসবাদ ইস্যুর সমাধান করতে পারে, তবে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হতে পারে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হয়, ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কের উন্নতি এখনো অনেক দূরের ব্যাপার।