ভারতী সিং ও শেহনাজ গিল কীভাবে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করে ১০০ কেজির উপর ওজন কমালেন – জানুন সহজ টিপস!

Spread the love

বর্তমান সময়ে ওজন কমানোর অন্যতম জনপ্রিয় এবং কার্যকর একটি পদ্ধতির নাম হলো ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং (Intermittent Fasting)। এটি কেবলমাত্র একটি ডায়েট প্ল্যান নয়, বরং এটি একটি জীবনধারার পরিবর্তনের সূচনা। ভারতী সিং, শেহনাজ গিল, রাম কাপুর কিংবা মালাইকা অরোরার মতো সেলিব্রিটিরা এই পদ্ধতিকে গ্রহণ করে তাঁদের অতিরিক্ত ওজন হ্রাস করেছেন এবং একেবারে ফিট এবং আকর্ষণীয় চেহারায় পরিণত হয়েছেন।

এই আর্টিকেলে আমরা জানব:

  • ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কী?
  • এটি কীভাবে কাজ করে?
  • বিভিন্ন জনপ্রিয় পদ্ধতি
  • উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
  • বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং সফল কেস স্টাডি
  • সঠিকভাবে অনুসরণ করার টিপস

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কী?

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং হলো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খাবার না খেয়ে থাকা এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহণের একটি রুটিন। এতে শরীরের মেটাবলিজমে পরিবর্তন আসে, ফ্যাট বার্ন হয়, এবং কোষের রিজেনারেশন ঘটে।

সাধারণভাবে, এতে খাবার গ্রহণের একটি উইন্ডো থাকে (যেমন ৮ ঘণ্টা), এবং বাকি সময়টা উপবাসে কাটানো হয়।


ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কীভাবে কাজ করে?

আমাদের শরীর যখন দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকে, তখন এটি সংরক্ষিত গ্লাইকোজেন এবং চর্বি ব্যবহার করে শক্তি উৎপাদন করে। এই সময়ে ইনসুলিন লেভেল কমে যায়, যা ফ্যাট বার্ন করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি অটোফ্যাজি (autophagy) নামক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীর পুরোনো কোষকে রিপেয়ার করে।


ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং-এর জনপ্রিয় পদ্ধতিগুলি:

১. ১৬/৮ পদ্ধতি:

দিনের ১৬ ঘণ্টা উপবাস এবং ৮ ঘণ্টা খাবার খাওয়ার সময়। উদাহরণ: দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার, বাকি সময় উপবাস।

২. ৫:২ ডায়েট:

সপ্তাহে ৫ দিন সাধারণভাবে খাবার খাওয়া এবং ২ দিন ৫০০–৬০০ ক্যালোরির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা।

৩. অল্টারনেট ডে ফাস্টিং:

একদিন উপবাস, পরদিন সাধারণ খাবার। একটি ধাপে ধাপে মানিয়ে নেওয়া যায় এমন পদ্ধতি।

৪. ওয়ারিয়র ডায়েট:

২০ ঘণ্টা উপবাস এবং ৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি ভারী মিল গ্রহণ করা হয়। এটি শরীরের ফ্যাট বার্ন এবং হরমোন রেগুলেশনে সহায়ক।


উপকারিতা:

ওজন হ্রাস
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ
ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বৃদ্ধি
কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণ
অটোফ্যাজির মাধ্যমে কোষ পুনর্গঠন
হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস
বুদ্ধিমত্তা ও স্মৃতিশক্তি উন্নয়ন
আয়ু বৃদ্ধি


পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

⚠️ প্রথম দিকে দুর্বলতা, মাথা ঘোরা
⚠️ হজমের সমস্যা
⚠️ সামাজিক জীবনে সামান্য প্রভাব
⚠️ সঠিক পুষ্টির অভাব হলে শরীর খারাপ হতে পারে


সেলিব্রিটি ইনস্পিরেশন:

ভারতী সিং:

দীর্ঘদিন ওজন নিয়ে সমস্যায় ভুগছিলেন। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং অনুসরণ করে ৩৫ কেজির বেশি ওজন কমান।

শেহনাজ গিল:

বিগ বস-এর পরে একেবারে চেহারার পরিবর্তন ঘটে। তিনি নিয়মিত ফাস্টিং করে ১২ কেজি ওজন কমিয়ে স্লিম ও স্মার্ট হন।

রাম কাপুর:

৪৫ কেজি পর্যন্ত ওজন কমিয়েছেন ফাস্টিং ও ওয়ার্কআউটের মাধ্যমে।


সঠিকভাবে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং অনুসরণ করার টিপস:

  1. ধৈর্য ধরুন – প্রথম দিকে কষ্ট হবে, কিন্তু শরীর মানিয়ে নেবে।
  2. হাইড্রেটেড থাকুন – পর্যাপ্ত জল, হার্বাল চা, ডাবের জল ইত্যাদি পান করুন।
  3. সুষম খাবার গ্রহণ করুন – ফল, শাকসবজি, প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খেতে হবে।
  4. অতিরিক্ত খাওয়া পরিহার করুন – উপবাস ভেঙে একসাথে অনেক খাওয়া ঠিক নয়।
  5. শরীরচর্চা চালিয়ে যান – ফাস্টিং ও ব্যায়ামের সমন্বয় হলে দ্রুত ফল পাওয়া যায়।

উপসংহার:

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কেবলমাত্র ওজন কমানোর একটি কৌশল নয়, এটি একটি বিজ্ঞানসম্মত এবং প্রাকৃতিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের উপায়। যারা শরীর নিয়ে সচেতন, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি কার্যকর এবং দীর্ঘস্থায়ী সমাধান।

তবে মনে রাখবেন, শুরু করার আগে একজন পুষ্টিবিদের বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *