২০২৫-এ বলিউড তারকাদের দেখার মতো ভ্যালেন্টাইন!

Spread the love

প্রতিশ্রুতি এমন একটি জিনিস যা মানুষকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসে। আমরা যখন কাউকে কোনো প্রতিশ্রুতি দিই, তখন সেটা শুধু কথা নয়, তার মধ্যে থাকে ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ আর বিশ্বাস। শুধু প্রেমের সম্পর্কেই নয়, বন্ধুত্ব, পরিবার কিংবা নিজের জীবনেও প্রতিশ্রুতির অনেক গুরুত্ব রয়েছে। বলিউড তারকারাও বিভিন্ন সময় নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কখনো ভালোবাসার, কখনো বন্ধুত্বের, কখনো নিজেদের উন্নতির জন্য, আবার কখনো সমাজের জন্য। প্রমিস ডে ২০২৫ উপলক্ষে আসুন দেখে নেওয়া যাক, বলিউড তারকারা কীভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং সেগুলো কতটা পালন করেছেন।

নেহা ধুপিয়া ও অঙ্গদ বেদির ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি

বলিউডের অন্যতম সুন্দর জুটি নেহা ধুপিয়া ও অঙ্গদ বেদি। তাদের সম্পর্ক শুধু ভালোবাসায় নয়, বন্ধুত্ব আর বোঝাপড়ার ওপরও গড়ে উঠেছে।

অঙ্গদের জন্মদিনে নেহা ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেন, যেখানে তিনি তার স্বামীকে কিছু মজার এবং সুন্দর প্রতিশ্রুতি দেন। তার প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে ছিল—

  • তিনি অঙ্গদের কথা আরও বেশি শুনবেন।
  • কম কথা বলবেন।
  • অঙ্গদের সিনেমার পছন্দকে গুরুত্ব দেবেন।
  • ধীরে ধীরে খাবেন।
  • টেস্ট ক্রিকেট দেখবেন।
  • মোবাইল ফোন কম ব্যবহার করবেন।
  • প্রতিদিন তাকে আরও বেশি ভালোবাসবেন।

নেহার এই পোস্ট দেখে অনেকেই প্রশংসা করেছেন, কারণ এটি শুধু মজার ছিল না, বরং এতে ছিল সম্পর্ককে সুন্দরভাবে টিকিয়ে রাখার বার্তা।

রাম চরণ ও এ আর রহমানের বন্ধুত্বের প্রতিশ্রুতি

বলিউড ও দক্ষিণী সিনেমার দুই জনপ্রিয় তারকা রাম চরণ ও এ আর রহমান। তাদের বন্ধুত্ব কেবল ব্যক্তিগত পর্যায়ে নয়, বরং কাজের ক্ষেত্রেও দৃঢ়।

গত বছর এ আর রহমান একটি অনুষ্ঠানের আয়োজকদের প্রতিশ্রুতি দেন যে রাম চরণ সেখানে উপস্থিত থাকবেন। রাম চরণ তখন বেশ ব্যস্ত থাকলেও তিনি তার বন্ধুকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রেখেছিলেন এবং অনুষ্ঠানে অংশ নেন। বন্ধুত্ব মানে শুধু একসঙ্গে সময় কাটানো নয়, বরং একে অপরের পাশে দাঁড়ানো এবং প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা। রাম চরণ ও এ আর রহমান সেটাই প্রমাণ করেছেন।

বলিউড তারকাদের সমাজসেবার প্রতিশ্রুতি

অনেক বলিউড তারকা শুধু নিজেদের জন্য নয়, সমাজের জন্যও নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারা বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও সেবামূলক কাজে নিজেদের যুক্ত করেছেন।

আলিয়া ভাটের প্রতিশ্রুতি

আলিয়া ভাট শুধু একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী নন, তিনি সমাজের জন্যও কাজ করতে চান। ২০২২ সালে তিনি ঘোষণা করেন যে তিনি ‘সালাম বোম্বে ফাউন্ডেশন’-এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এই সংস্থাটি সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা, পেশাগত দক্ষতা শেখানো, ক্রীড়া ও শিল্পের সুযোগ তৈরি করতে কাজ করে। আলিয়া এই কাজের জন্য তার আয় থেকে অনুদানও দেন।

সোনু সুদের প্রতিশ্রুতি

সোনু সুদ করোনা মহামারির সময় এক সত্যিকারের নায়ক হয়ে উঠেছিলেন। তিনি ‘সুদ চ্যারিটি ফাউন্ডেশন’ তৈরি করেন এবং বিভিন্ন সামাজিক কাজে যুক্ত হন।

ভারতের সবচেয়ে বড় রক্তদান কর্মসূচি চালু করেন (‘Sonu For You’)।
বিনামূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও চিকিৎসাসামগ্রী বিতরণ করেন।
গরিব ছাত্রদের জন্য ‘সম্ভবম’ নামে বিনামূল্যে আইএএস পরীক্ষার কোচিং চালু করেন।

সোনু সুদের এই কাজ সমাজে দারুণ প্রভাব ফেলেছে এবং তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পালন করেছেন।

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জোনাসের প্রতিশ্রুতি

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে বহু বছর ধরে কাজ করছেন। তিনি শিশুদের শিক্ষা, নারীদের অধিকার এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির জন্য কাজ করছেন।

তিনি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে দারিদ্র্যপীড়িত শিশুদের জন্য শিক্ষা ও নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন।

দীপিকা পাডুকোনের প্রতিশ্রুতি

ডিপ্রেশনের সঙ্গে নিজের লড়াইয়ের পর দীপিকা ‘LiveLoveLaugh’ ফাউন্ডেশন তৈরি করেন, যা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে।

এটি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং রোগীদের সহায়তা দেয়। দীপিকা তার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে শিখে সমাজের জন্য ভালো কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং তা পালন করছেন।

ধূমপান ছাড়ার প্রতিশ্রুতি

ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, কিন্তু এটি ছাড়তে পারা অনেকের জন্য কঠিন। বলিউডের অনেক তারকাই এই বদঅভ্যাস ত্যাগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

শাহরুখ খানের প্রতিশ্রুতি

একসময় শাহরুখ খান দিনে প্রায় ১০০টি সিগারেট খেতেন। তবে এখন তিনি এই অভ্যাস ছাড়ার চেষ্টা করছেন এবং তার অনুরাগীদেরও সুস্থ থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন।

সাইফ আলি খানের প্রতিশ্রুতি

২০০৭ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সাইফ ধূমপান ছেড়ে দেন এবং আরও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন শুরু করেন।

অর্জুন রামপালের প্রতিশ্রুতি

করোনার সময় ছেলেকে দেখে অর্জুন রামপাল বুঝতে পারেন যে তার ধূমপান করা সন্তানের জন্য ক্ষতিকর। এরপর থেকেই তিনি ধূমপান ছেড়ে দেন।

হৃতিক রোশনের প্রতিশ্রুতি

২০২০ সালে হৃতিক ঘোষণা দেন যে তিনি আর ধূমপান করেন না এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘‘আমি যদি কৃষ থাকতাম, তবে প্রথমেই ধূমপান বন্ধ করতাম।’’

সব প্রতিশ্রুতি কি রাখা হয়?

সব প্রতিশ্রুতি রাখা সম্ভব হয় না। বলিউডে অনেক প্রেমের গল্প শুরু হলেও তা সবসময় সুখের পরিণতি পায় না।

কিছু তারকা ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু পরবর্তীতে তা রক্ষা করতে পারেননি। বলিউডে বিচ্ছেদের গল্প যেমন আছে, তেমনি আছে চিরস্থায়ী সম্পর্কের গল্পও।

কিন্তু প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অর্থ হলো আন্তরিকভাবে চেষ্টা করা। কিছু প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত না হলেও, এটি সম্পর্কের প্রতি দায়বদ্ধতা প্রকাশ করে।

প্রমিস ডে কেবল ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার জন্য নয়, এটি নিজের উন্নতি এবং সমাজের জন্য ভালো কিছু করার প্রতিশ্রুতি নেওয়ারও দিন।

বলিউড তারকারা যেমন তাদের জীবনের জন্য প্রতিশ্রুতি দেন, আমরাও নিজেদের জন্য ভালো কিছু করার প্রতিশ্রুতি নিতে পারি।

এ বছর প্রমিস ডে-তে আসুন আমরা সবাই প্রতিজ্ঞা করি, নিজেদের ভালো রাখার, কাছের মানুষদের খুশি রাখার এবং সমাজের জন্য ভালো কিছু করার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *