শ্রাবন্তীর ছেলেকে আর চিনতেই পারবেন না! এখন কী করছেন ঝিনুক জানেন?

Spread the love

টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে চর্চার শেষ নেই। তার ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পেশাদার জীবনের প্রতিটি দিকই আলোচনায় থাকে। তবে তার একমাত্র ছেলে অভিমন্যু চট্টোপাধ্যায়, যাকে শ্রাবন্তী আদর করে “ঝিনুক” বলে ডাকেন, তিনি সাধারণত লাইমলাইটের বাইরে থাকতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

অন্যান্য স্টার কিডদের মতো ঝিনুক প্রচারের আলোয় আসতে চান না। তার সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতিও তুলনামূলক কম। টলিউডের পার্টি, সিনেমার প্রিমিয়ার, ফিল্ম ইভেন্ট—এসব জায়গায় খুব একটা দেখা যায় না তাকে। তবে ঝিনুক কী করছেন এখন? ভবিষ্যতে তিনি কি তারকা হতে চলেছেন?

মায়ের মতো অভিনয় নয়, ঝিনুকের লক্ষ্য ক্যামেরার পেছনের কাজ!

অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, মায়ের মতো ঝিনুকও অভিনয় করবেন। তবে এখন পর্যন্ত সেই সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছেন শ্রাবন্তী। বরং তিনি কাজ করতে চান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ক্যামেরার পিছনের দুনিয়ায়।

শ্রাবন্তী নিজেই বলেছেন, “ঝিনুক ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করবে ঠিকই, তবে ক্যামেরার সামনে নয়, ক্যামেরার পেছনে। কদিন তো শ্রীজাতকে অ্যাসিস্ট করল ‘মানবজমিন’-এ। তবে এখন পড়াশোনার খুব চাপ, আগে সেটা সামলাক, তারপর ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করবে।” এখনই অভিনয়ে আসার কোনো ইচ্ছে নেই ঝিনুকের। বরং সিনেমার প্রযুক্তিগত দিক, পরিচালনা, প্রোডাকশন বা অন্য কোনো বিভাগে কাজ করার আগ্রহ আছে তার।

ঝিনুকের জন্ম শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম স্বামী, পরিচালক রাজীব বিশ্বাসের সংসারে। খুব অল্প বয়সেই বিয়ে করেছিলেন শ্রাবন্তী, এরপরই তিনি মা হন। তবে তার ও রাজীবের সংসার খুব একটা সুখের ছিল না। নানা কারণে তাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলতে থাকে, যা শেষ পর্যন্ত বিচ্ছেদে গিয়ে ঠেকে। শ্রাবন্তীর জীবনে এরপর আরও দু’বার বিয়ে এসেছে। তবে প্রত্যেকবারই সেই সম্পর্ক ভেঙে গেছে। কিন্তু এই সমস্ত টানাপোড়েনের মধ্যেও তিনি কখনোই ঝিনুককে দূরে সরাননি। বরং ছেলে সবসময়ই ছিল তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ঝিনুক মায়ের সঙ্গে থাকেন এবং তাদের সম্পর্ক বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ। তারা একসঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন এবং মা-ছেলের বন্ধন খুবই শক্তিশালী।

শ্রাবন্তী সবসময় চেষ্টা করেছেন ছেলেকে একটা স্বাভাবিক জীবন দিতে। যদিও তার নিজের জীবন ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে, কিন্তু তিনি কখনো চাননি তার ছেলে অপ্রয়োজনীয় বিতর্কের শিকার হোক।

অন্য স্টারকিডদের মতো লাইমলাইটে থাকা বা মিডিয়ার সামনে আসার ইচ্ছে ঝিনুকের নেই। বরং নিজের মতো করেই সে বড় হয়েছে, নিজের পছন্দমতো জীবন গুছিয়ে নিয়েছে। শ্রাবন্তী কখনোই তাকে কোনো কিছুর জন্য বাধ্য করেননি।

ঝিনুকের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও ভক্তদের মধ্যে আগ্রহ রয়েছে। প্রায় দুই বছর আগে, তিনি প্রকাশ্যে জানান যে মডেল দামিনীর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন। তাদের সম্পর্ক নিয়ে বেশ চর্চা হয়েছিল। একসঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করা—সব মিলিয়ে তারা আলোচনায় ছিলেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়।

বর্তমানে ঝিনুক কোনো সম্পর্কে আছেন কিনা, তা জানা যায়নি। তবে তিনি এখন পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার নিয়ে বেশি মনোযোগী।

টলিউডে ক্যারিয়ার গড়ার পরিকল্পনা

ঝিনুকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে তিনি যে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গেই যুক্ত থাকবেন, তা একপ্রকার নিশ্চিত।

যদিও অভিনয়ে আসার কোনো ইচ্ছে নেই, কিন্তু সিনেমার পরিচালনা, চিত্রনাট্য লেখা বা সিনেমাটোগ্রাফির মতো কাজে তার আগ্রহ থাকতে পারে। যেহেতু ইতোমধ্যে তিনি পরিচালক শ্রীজাত মুখোপাধ্যায়ের ‘মানবজমিন’ ছবির সেটে অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেছেন, তাই বোঝাই যাচ্ছে যে তিনি ধীরে ধীরে ইন্ডাস্ট্রির কাজে অভ্যস্ত হচ্ছেন।

আরও পড়ুন : রুক্মিণীর সঙ্গে শুভশ্রীর রেষারেষি চরমে! মহা বিরক্ত দেব! কী হল জানেন?

মা-ছেলের সম্পর্ক

শ্রাবন্তী ও ঝিনুকের সম্পর্ক একেবারেই বন্ধুত্বপূর্ণ। শ্রাবন্তী বরাবরই ছেলের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, সন্তানকে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে দেওয়া উচিত।

ঝিনুকের পড়াশোনা থেকে শুরু করে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা—সব ক্ষেত্রেই শ্রাবন্তী তাকে নিজের মতো করে চলতে দিয়েছেন। তিনি কখনো কোনো কিছু চাপিয়ে দেননি, বরং সবসময় পাশে থেকেছেন। মা-ছেলের এই সম্পর্কই তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তি। ঝিনুকও মাকে দারুণ ভালোবাসেন এবং তাকে সম্মান করেন।

ঝিনুক কি ভবিষ্যতে পরিচালনা করবেন?

ঝিনুক পরিচালনা করতে চান কি না, সেটি এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে ক্যামেরার পিছনের কাজেই তার বেশি আগ্রহ।

টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচালকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বড় অভিনেতা বা অভিনেত্রী হওয়ার পাশাপাশি, একজন দক্ষ পরিচালক কিংবা প্রযোজকও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। ঝিনুক কি ভবিষ্যতে পরিচালকের চেয়ারে বসবেন? সেটাই এখন দেখার বিষয়!

অন্য স্টার কিডদের থেকে কতটা আলাদা ঝিনুক?

ঝিনুকের সঙ্গে টলিউডের অন্য স্টারকিডদের তুলনা করলে দেখা যাবে, সে একটু অন্যরকম। বেশিরভাগ তারকাসন্তান যখন অভিনয়কেই ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেন, ঝিনুক বরং ক্যামেরার পেছনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

অনেকে যেখানে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সুযোগ পাওয়ার জন্য প্রচার ও লাইমলাইটে থাকতে চান, সেখানে ঝিনুক বরং নিজেকে আড়ালে রাখতেই পছন্দ করেন।

এই দিক থেকে তাকে বলিউডের কিছু স্টারকিডের সঙ্গেও তুলনা করা যেতে পারে, যারা অভিনয়ে না এসে পরিচালনা বা প্রযোজনার দিকেই বেশি ঝুঁকেছেন।

শ্রাবন্তী এখনও টলিউডে কাজ করছেন। তিনি নিজের ক্যারিয়ার নিয়েও বেশ সিরিয়াস। তবে ভবিষ্যতে যদি ঝিনুক পরিচালনায় আসেন, তাহলে কি মা-ছেলে একসঙ্গে কোনো সিনেমা বানাবেন?

এটি একটি বড় প্রশ্ন। হয়তো ভবিষ্যতে এমন কিছু দেখা যেতে পারে, যেখানে শ্রাবন্তী ছেলের পরিচালিত সিনেমায় অভিনয় করবেন! ঝিনুকের ভবিষ্যৎ এখনো গড়ে ওঠার পর্যায়ে। তিনি ক্যামেরার সামনে নয়, বরং ক্যামেরার পেছনে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান।

শ্রাবন্তীর ছেলের পথচলা কেমন হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে এটুকু বলা যায়, তিনি যদি পরিশ্রম করেন এবং নিজের কাজের প্রতি একনিষ্ঠ থাকেন, তাহলে ভবিষ্যতে টলিউডে তিনি বড় অবদান রাখতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *