বলিউড ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম পরিচিত মুখ ক্রুষ্ণা অভিষেক। অভিনেতা এবং কমেডিয়ান হিসেবে তার পরিচিতি থাকলেও, তার আরও একটি পরিচয় রয়েছে—তিনি জনপ্রিয় অভিনেতা গোবিন্দর ভাগ্নে। বিনোদন জগতে সফলতার পাশাপাশি, তিনি ফ্যাশনের প্রতিও গভীরভাবে অনুরাগী। ফ্যাশনের প্রতি তার এমন এক ভালোবাসা রয়েছে, যা অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। তিনি তার জামা-জুতার বিশাল সংগ্রহ সংরক্ষণের জন্য একটি আলাদা ফ্ল্যাট কিনেছেন।
ক্রুষ্ণা অভিষেকের ফ্যাশনের প্রতি ভালোবাসা
ক্রুষ্ণা অভিষেকের ফ্যাশনের প্রতি ভালোবাসা কোনো সাম্প্রতিক বিষয় নয়। ছোটবেলা থেকেই পোশাক ও জুতার প্রতি তার গভীর আগ্রহ ছিল। শৈশবে তিনি মামা গোবিন্দর জামাকাপড় পরতেন। সে সময় বলিউড তারকাদের মধ্যে গোবিন্দ ছিলেন অন্যতম স্টাইলিশ ব্যক্তিত্ব। ব্র্যান্ডেড পোশাকের প্রতি তার দুর্বলতা ছিল প্রবল। প্রাডা, গুচি, ভার্সাচি, আর্মানি, লুই ভুইতঁ—এসব বিখ্যাত ব্র্যান্ডের পোশাক পরতেন গোবিন্দ। সেই সময়ে ক্রুষ্ণা নিজে বড় ব্র্যান্ড সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানতেন না, তবে মামার পোশাক পরার সুবাদে তিনি বিলাসবহুল পোশাকের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
ক্রুষ্ণা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি যখন কলেজে পড়তাম, মামা গোবিন্দ তখন সেরা ব্র্যান্ডের পোশাক পরতেন। আমার তখন ব্র্যান্ডের কোনো ধারণা ছিল না, কিন্তু আমি তার পোশাক পরেই বড় হয়েছি। তার পরা শার্ট, জ্যাকেট আমিই পরে ফেলতাম। সেখান থেকেই ফ্যাশনের প্রতি ভালোবাসার শুরু।’প্রত্যেকটি শিশু এক একটি অমূল্য রত্ন, যার মধ্যে লুকিয়ে থাকে অসীম সম্ভাবনা। কিন্তু আপনি জানেন কি, জ্যোতিষশাস্ত্র মতে কিছু নির্দিষ্ট তারিখ রয়েছে, যেখানে জন্ম নেওয়া শিশুদের মধ্যে দেখা যায় অসাধারণ প্রতিভা! এমন কিছু তারিখ রয়েছে, যেগুলির মধ্যে জন্ম নেওয়া শিশুরা পরবর্তীতে হয়ে ওঠে এক একটি জিনিয়াস।
শুধু জামা-জুতা রাখার জন্য একটি সম্পূর্ণ ফ্ল্যাট কেনা নিঃসন্দেহে এক অভিনব সিদ্ধান্ত। সাধারণত, বলিউড তারকারা বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন, তবে ক্রুষ্ণা অভিষেকের মতো জামা-জুতার জন্য আলাদা ফ্ল্যাট কেনার ঘটনা বিরল।
প্রথমদিকে তিনি নিজের বিলাসবহুল পোশাক ও জুতার জন্য বিশেষ কিছু তাক ও আলমারি ব্যবহার করতেন। তবে সংগ্রহ দিন দিন এতটাই বাড়তে থাকে যে, তার নিজের বাসায় আর এগুলো সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। সেই সময় তিনি সিদ্ধান্ত নেন, নিজের এই বিপুল ফ্যাশন সংগ্রহশালা সংরক্ষণের জন্য আলাদা একটি ফ্ল্যাট কেনার।
ক্রুষ্ণা তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনেন, যেখানে মূলত তার পোশাক ও জুতার সংগ্রহ রাখা হয়। ফ্ল্যাটটি তিনি একেবারে একটি বুটিকের আদলে সাজিয়েছেন। পুরো ফ্ল্যাটে রয়েছে আলাদা আলাদা সেকশন—একদিকে শার্ট, টি-শার্ট ও জ্যাকেটের সুবিন্যস্ত তাক, অন্যদিকে দামী ব্র্যান্ডের জুতার জন্য বিশেষভাবে তৈরি আলমারি। বিশেষভাবে ডিজাইন করা এই ফ্ল্যাটে তার প্রতিটি পোশাক ও জুতার যত্নের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি প্রতি ছয় মাস অন্তর নিজের জামাকাপড় বদলাই। এত পোশাক ও জুতা সংগ্রহ করেছি যে, এগুলো রাখার জন্য আলাদা জায়গার দরকার পড়েছে। তাই আমি একটা বাড়ি কিনেছি, যেটাকে এখন বুটিকের মতো ব্যবহার করি।’
ক্রুষ্ণার এই সিদ্ধান্ত তার ফ্যাশনের প্রতি অনুরাগের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। বলিউডে এমন নজির খুব কম। তার এই উদ্যোগ অনেকের কাছে বিলাসিতা মনে হলেও, ফ্যাশনের প্রতি ভালোবাসার জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ।
বলিউড তারকারা ফ্যাশন ট্রেন্ড সেট করেন এবং সাধারণ মানুষের জন্য নতুন ফ্যাশন ধারণা নিয়ে আসেন। শাহরুখ খান, সালমান খান, দীপিকা পাড়ুকোন, রণবীর সিং, কারিনা কাপুরের মতো তারকারা তাদের অনন্য স্টাইল স্টেটমেন্টের জন্য বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত।
রণবীর সিং:
তার ব্যতিক্রমী এবং রঙিন পোশাকের জন্য পরিচিত। তিনি সাহসী ফ্যাশন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করেন।
দীপিকা পাড়ুকোন: তার এলিগ্যান্ট এবং ক্লাসিক লুক দর্শকদের মুগ্ধ করে।
সোনম কাপুর:
ফ্যাশনের রাণী হিসেবে পরিচিত। আন্তর্জাতিক ডিজাইনারদের সঙ্গে কাজ করে ফ্যাশন জগতে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন।
শাহরুখ খান ও সালমান খান:
সিম্পল কিন্তু স্টাইলিশ লুক বজায় রাখেন, যা সাধারণ মানুষ সহজেই অনুসরণ করতে পারেন।
ক্রুষ্ণা ছোটবেলা থেকেই ফ্যাশনের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। মামা গোবিন্দর পোশাক পরেই বড় হয়েছেন তিনি। গোবিন্দ নিজেই ছিলেন এক ফ্যাশন আইকন। তার জ্বলজ্বলে পোশাক ও ব্র্যান্ডেড স্টাইল ক্রুষ্ণার ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।
ক্রুষ্ণার মতে, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন মামা সবসময় দারুণ ব্র্যান্ডের পোশাক পরতেন। সেসব পোশাক আমি পরার সুযোগ পেতাম এবং তখন থেকেই ফ্যাশনের প্রতি আমার ভালোবাসা জন্মায়।
নিজের উপার্জন শুরু করার পর, ক্রুষ্ণা নিজস্ব ফ্যাশন সংগ্রহ তৈরি করতে থাকেন। বর্তমানে তার সংগ্রহে রয়েছে গুচি, প্রাডা, লুই ভুইতঁ, ডলচে অ্যান্ড গাব্বানা, আর্মানি, চ্যানেলসহ আরও অনেক বিখ্যাত ব্র্যান্ডের পোশাক ও জুতা।
ফ্যাশনের প্রতি মানুষের ভালোবাসা নতুন কিছু নয়। তবে ক্রুষ্ণা অভিষেকের মতো এত বিশাল সংগ্রহ গড়ে তোলার ঘটনা সমাজের দৃষ্টিতে এক নতুন আলো ফেলে। অনেকের কাছেই এটি বিলাসিতা মনে হতে পারে, আবার কেউ কেউ এটিকে ফ্যাশনের প্রতি এক গভীর অনুরাগ হিসেবেও দেখবেন।
অনেকে প্রশ্ন তুলতে পারেন, কেন এত জামা-জুতা সংগ্রহ করা? সত্যি বলতে, ফ্যাশন শুধু বিলাসিতা নয়, এটি একজন মানুষের ব্যক্তিত্বেরও প্রতিফলন ঘটায়। ক্রুষ্ণা অভিষেকের জন্য পোশাক ও জুতা শুধু দরকারি সামগ্রী নয়, বরং এটি তার শৈলী ও রুচির প্রকাশ।
অনেকে ধারণা করছেন, ভবিষ্যতে ক্রুষ্ণা নিজস্ব ফ্যাশন ব্র্যান্ড চালু করতে পারেন। বলিউড তারকাদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের ফ্যাশন ব্র্যান্ড চালু করেছেন, যেমন—সোনম কাপুর, আনুশকা শর্মা, দীপিকা পাড়ুকোন।
ক্রুষ্ণা যদি নিজের ফ্যাশন ব্র্যান্ড চালু করেন, তাহলে তিনি আন্তর্জাতিক মানের ডিজাইন ও ট্রেন্ড নিয়ে কাজ করতে পারেন। তার ফ্যাশন হাউস হতে পারে বলিউড ও আন্তর্জাতিক বাজারে পরিচিত একটি নাম।
এছাড়া, তিনি ফ্যাশন শো আয়োজন করতে পারেন, যেখানে তার সংগ্রহে থাকা অনন্য ডিজাইন প্রদর্শিত হবে। ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির সাথে নতুন ডিজাইনারদের কাজের সুযোগ তৈরি করা এবং বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে তরুণ প্রতিভাদের সামনে আনার পরিকল্পনাও থাকতে পারে।
ভবিষ্যতে তিনি ফ্যাশন নিয়ে আরও গবেষণা করতে পারেন এবং প্রযুক্তির সঙ্গে একীভূত করে নতুন কিছু আনতে পারেন, যেমন—স্মার্ট পোশাক, যা তাপমাত্রার সঙ্গে নিজেকে সামঞ্জস্য করতে পারে। এ ধরনের নতুনত্ব তাকে ফ্যাশন দুনিয়ায় আরও সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
ফ্যাশন শুধু পোশাকের ব্যাপার নয়, এটি এক ধরনের আত্মপ্রকাশ। বলিউড তারকারা তাদের স্টাইলের মাধ্যমে নিজেদের ব্যক্তিত্বকে তুলে ধরেন এবং ট্রেন্ড সেট করেন। ক্রুষ্ণা অভিষেক সেই ধারণাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছেন। জামা-জুতার প্রতি তার অসীম ভালোবাসা এবং আলাদা ফ্ল্যাট কেনার সিদ্ধান্ত তাকে ব্যতিক্রমী করেছে।
তার সংগ্রহশালা শুধু ব্যক্তিগত বিলাসিতা নয়, বরং এটি ফ্যাশনের প্রতি এক গভীর শ্রদ্ধা। ক্রুষ্ণা যদি ভবিষ্যতে নিজস্ব ফ্যাশন ব্র্যান্ড চালু করেন, তবে এটি ফ্যাশন দুনিয়ায় নতুন অধ্যায় যোগ করবে। তার ফ্যাশন ভাবনা ও স্টাইল স্টেটমেন্ট তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে, যা ভবিষ্যতের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির জন্য এক নতুন পথ খুলে দেবে।