অক্টোবরে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে এসসিও বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকে যোগ দিতে পাকিস্তান যাচ্ছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। তবে দ্বিপাক্ষিক কোনও আলোচনা হবে না বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
শাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশন (এসসিও)-র সদস্য দেশগুলির বৈঠক রয়েছে অক্টোবরে। এ বারের বৈঠক আয়োজিত হচ্ছে পাকিস্তানে। ভারতের তরফেও প্রতিনিধি থাকবেন সেখানে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর যাবেন পাকিস্তানে এসসিও বৈঠকে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে। তবে সেখানে দ্বিপাক্ষিক কোনও আলোচনা যে হবে না, তা শনিবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। জয়শংকরের বক্তব্য, ‘‘বহুপাক্ষিক আলোচনায় যোগ দিতে যাচ্ছি। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি না।’’
শনিবার সকালে দিল্লিতে এক সাংবাদিক বৈঠকে জয়শংকর বলেন, “এই বৈঠক নিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলির বেশ কৌতুহল রয়েছে। হয়তো দুই দেশের সম্পর্ক যে পর্যায়ে রয়েছে, সেই কারণে এই কৌতুহল। কিন্তু আমি স্পষ্ট করতে চাই, এটি একটি বহুপাক্ষিক আলোচনা। আমি কোনও দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যোগ দিতে যাচ্ছি না। সেখানে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে কোনও আলোচনা করতে যাচ্ছি না। এসসিও-র একজন সদস্য হিসাবে আমি সেখানে যাচ্ছি।”
আগামী ১৫-১৬ অক্টোবর পাকিস্তানের ইসলামাবাদে এসসিও সদস্য রাষ্ট্রগুলির বৈঠক রয়েছে। পাকিস্তানে আয়োজিত ওই বৈঠকে বিদেশমন্ত্রীকে পাঠানো হবে, তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই জল্পনা চলছিল। শেষে শুক্রবারই সরকারি ভাবে সিলমোহর পড়েছে এই বিষয়ে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, ইসলামাবাদে ভারতীয় প্রতিনিধিদলকে নেতৃত্ব দেবেন জয়শংকর।
শনিবার সে প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বিদেশমন্ত্রী বলেন, “আমার পাকিস্তান যাওয়ার কথা রয়েছে এই মাসের মাঝামাঝি সময়ে। এসসিও সদস্য রাষ্ট্রগুলির সরকারের বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছি। সাধারণত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে (রাষ্ট্রনেতাদের বৈঠকে) প্রধানমন্ত্রী যান। সরকারগুলির বৈঠকে কোনও এক মন্ত্রী যান, সেটি পরিবর্তন হতে থাকে। এটিই রেওয়াজ। এ বারের বৈঠক পাকিস্তানে হচ্ছে। কারণ, তারাও ওই মঞ্চের সদস্য রাষ্ট্র।”
মোদীর অনুপস্থিতিতে এসসিও-র বৈঠকে দিল্লি থেকে অন্য কোনও প্রতিনিধি যাওয়ার নিদর্শনও রয়েছে। যেমন চলতি বছরের ৩-৪ জুলাই কাজ়াখাস্তানে এসসিও-র বৈঠকে থাকেননি মোদী। তাঁর বদলে ভারতে হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। গত বছর গোয়ায় যখন শাংহাই কো-অপারেশনের বৈঠক হয়েছিল, তখনও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এ দেশে আসেননি। তিনি পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন পাক বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জ়ারদারিকে।
কাশ্মীর সমস্যা থেকে শুরু করে পাকিস্তান থেকে জঙ্গি অনুপ্রবেশ— একাধিক বিষয়ে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে অস্থিরতা রয়েছে। এমনকি, দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক আলোচনা তো দূর, দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেটও বন্ধ রয়েছে দুই দেশের। সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগে সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক আন্তর্জাতিক মঞ্চে নাম না করে পাকিস্তানকে বিঁধেছে ভারত। এমন অবস্থায় এসসিও-র বৈঠকে সদস্য দেশগুলির বৈঠকে বিদেশমন্ত্রীর পাকিস্তান সফর ঘিরে কৌতুহল বৃদ্ধি পেয়েছে কূটনৈতিক মহলে।