শনিবার রাতে কলকাতায় এসেছেন অমিত শাহ। রবিবার বনগাঁয় গিয়েছিলেন সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। সেই সরকারি অনুষ্ঠান থেকেই দেন রাজনৈতিক বার্তা।
পশ্চিমবঙ্গে এসে পরিবর্তনের ডাক দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শনিবার রাতে কলকাতায় এসেছেন তিনি। রবিবার বনগাঁয় গিয়েছিলেন সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। সরকারি সেই অনুষ্ঠানেও শাহের মুখে শোনা গেল রাজনৈতিক বার্তা। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেই বাংলায় পরিবর্তনের ডাক দিলেন তিনি। জানালেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশের সমস্যা আর থাকবে না। বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে বেআইনি অনুপ্রবেশ বন্ধ করে দেবে বিজেপি সরকার। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নিশানা করেন তিনি।
পেট্রাপোল সীমান্তে যাত্রী টার্মিনাল ভবন এবং মৈত্রী দ্বার উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন শাহ। সেখান থেকে তিনি বলেন, ‘‘গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশ জুড়ে অনেক কাজ করেছেন। বাংলার মানুষের কিছু খেদ আছে। কিন্তু চিন্তা নেই, ২০২৬ সালের নির্বাচনের পর সেই খেদ মিটিয়ে দেবে বিজেপি সরকার। পশ্চিমবঙ্গের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ মোদীর নেতৃত্বে খুব ভাল কাজ করছে। গোটা এলাকার উন্নয়ন হচ্ছে। আমাকে শান্তনু ঠাকুর জানালেন, বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে পাঁচ-ছ’হাজার মানুষ প্রতি দিন কল্যাণী এমসে চিকিৎসার জন্য আসেন। ২০২৬ সালে আপনারা পরিবর্তন এনে দিন রাজ্যে। বেআইনি অনুপ্রবেশ বন্ধ করে দেব। উন্নয়নই মোদী সরকারের একমাত্র লক্ষ্য।’’
কেন্দ্রীয় বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের বরাবরের অভিযোগ, বাংলার প্রাপ্য টাকা দেয় না কেন্দ্র। শাহ বলেন, ‘‘গত ১০ বছরে বাংলাকে কী দিয়েছেন মমতা? তৃণমূল তো কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে রয়েছে। কেন্দ্রে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকাকালীন বাংলাকে ২.৯ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। মোদী সরকার বাংলাকে গত ১০ বছরে দিয়েছে ৭.৭৪ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু মোদীর দেওয়া টাকা বাংলায় এসে দুর্নীতির বলি হয়ে যায়। বাংলায় ‘অচ্ছে দিন’ আর বেশি দূরে নেই। আমরা বাংলাকে আরও উন্নত আরও সুজলা সুফলা করে তুলব।’’ মোদী সরকারের আমলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যের পরিমাণও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন শাহ। তাঁর কথায়, ‘‘মোদী যখন কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছিলেন, তখন বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার কোটি। এখন তা ৩০ হাজার কোটি হয়েছে। ব্যবসা বেড়েছে, কাজ বেড়েছে এবং বাংলায় কর্মসংস্থানও হয়েছে।’’
দুপুরে কলকাতায় ফিরে বিজেপির অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা শাহের। সল্টলেকে পূর্বাঞ্চল সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন তিনি। রাজ্য বিজেপির শীর্ষ স্তরের নেতারা সেখানে উপস্থিত থাকবেন। এই কর্মসূচির জন্য দু’দিন আগেই শাহের কলকাতায় আসার কথা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’ এবং তৎপরবর্তী আবহাওয়া সংক্রান্ত পরিস্থিতির কারণে তিনি বঙ্গ সফর পিছিয়ে দিয়েছিলেন। অবশেষে শনিবার কলকাতায় এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলায় এসেই ছাব্বিশের নির্বাচনের সুর বেঁধে দিলেন। আগামী ১৩ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের ছ’টি কেন্দ্রে বিধানসভার উপনির্বাচন রয়েছে। তার আগে শাহের বার্তা দলকে বাড়তি মনোবল জোগাবে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।