রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের তরফে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তি জানাচ্ছে, রাজ্যপালের অনুমতিক্রমে কলকাতা পুলিশের এলাকার ছ’টি হাসপাতালে ‘রাত্তিরের সাথী— হেল্পার অ্যাট নাইট’ কর্মসূচি চালু হচ্ছে।
আরজি কর-কাণ্ডের আবহে কর্মস্থলে মহিলাদের নিরাপত্তায় জোর দিতে এক মাস আগেই ১৭ দফা পদক্ষেপের ঘোষণা করা হয়েছিল নবান্নের তরফে। সেই তালিকারই অন্যতম, ‘রাত্তিরের সাথী— হেল্পার অ্যাট নাইট’ চালুর বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হল। প্রাথমিক ভাবে কলকাতা পুলিশের এলাকার ছ’টি সরকারি হাসপাতালকে এর আওতায় আনা হয়েছে।
রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের তরফে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তি জানাচ্ছে, রাজ্যপালের অনুমতিক্রমে কলকাতা পুলিশের এলাকার চারটি সরকারি হাসপাতাল একটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এবং একটি জেলা হাসপাতালে কর্তব্যরত নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে পর্যবেক্ষণ, নজরদারি ও সমন্বয় গড়ে তুলতে এই কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। প্রতিটি হাসপাতালের দায়িত্বে থাকবেন এক জন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার।
কলকাতার পুলিশ কমিশনারের সুপারিশের ভিত্তিতেই ওই ছ’জন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারকে ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্পে নিয়োগ করা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। প্রসঙ্গত, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ এবং খুনের মামলার শুনানিতে অগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের নিরাপত্তায় টাস্ক ফোর্স গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল। এর পরেই সমস্ত সরকারি মেডিক্যাল কলেজ, জেলা হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ, সেনা অফিসার, নৌবাহিনী, বায়ুসেনার অফিসার মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই মর্মে একটি নির্দেশিকাও জারি করেছিলেন রাজ্য পুলিশের তৎকালীন এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ বর্মা। ঘটনাচক্রে, তিনিই এখন কলকাতার পুলিশ কমিশনার।
ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, গত ২ বছরের মধ্যে অবসর নেওয়া পুলিশ ইনস্পেক্টর থেকে এসপি, যাঁরা এখনও শারীরিক ভাবে কর্মক্ষম এবং হাসপাতালগুলির নিরাপত্তার তদারকি করতে ইচ্ছুক, তাঁদের সম্পর্কে যেন তথ্য জোগাড় করা হয়। একই ভাবে অবসর নেওয়া সেনা অফিসার, নৌবাহিনীর অফিসার বা বায়ুসেনার অফিসারদেরও একটি তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছিল। কোনও রকম হিংসা বা লিঙ্গবৈষম্য দূর করা এবং চিকিৎসক, শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের জন্য নিরাপদ কাজের পরিবেশ তৈরির উদ্দেশ্যে প্রথম দফায় শহরের ছ’টি হাসপাতালে চালু হল ‘রাত্তিরের সাথী’ কর্মসূচি।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে নওশাদ আলি, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অনুজ হোম রায়, এসএসকেএমে অরবিন্দকুমার মিশ্র, এনআরএল মেডিক্যাল কলেজে আসিফ জামাল, মেটিয়াবুরুজ (গার্ডেনরিচ এসজিএফ)-এ দেবাশিস চক্রবর্তী এবং এমআর বাঙুরে বিশ্বজিৎ রায় দায়িত্ব পেয়েছেন। এঁরা সকলেই কলকাতা পুলিশের ডেপুটি বা অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদে কর্মরত ছিলেন। প্রসঙ্গত, আদালতের নির্দেশে বর্তমানে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের দায়িত্বে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।