গত ১৪ অগস্ট রাতে রিমঝিম সিংহের ডাকে মেয়েরা পথে নেমেছিলেন। পা মিলিয়েছিলেন পুরুষেরাও। সেই রিমঝিমদের ডাকেই আবার রাত দখল করতে নামবেন মেয়েরা।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আবারও রাত দখল করবেন মেয়েরা। মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার এক মাসের মাথায় নতুন কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। গত ১৪ অগস্ট রাতে রিমঝিম সিংহের ডাকে মেয়েরা পথে নেমেছিলেন। পা মিলিয়েছিলেন পুরুষেরাও। সেই রিমঝিমদের ডাকেই আবার রাত দখল করতে নামবেন মেয়েরা। মূলত সংস্কৃতি জগতের মানুষদের এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল গোটা দেশ। ‘বিচার চাই’, দাবি তুলে পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ থেকে খ্যাতনামীরা। প্রায় প্রতি দিনই কোনও না কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। কলকাতার রাজপথ দখল করছেন আন্দোলনকারীরা। আরজি কর-কাণ্ডের পর সমাজমাধ্যমে ১৪ অগস্ট ‘রাত দখলের কর্মসূচি’র ডাক দিয়েছিলেন ‘মেয়েদের রাত দখল করো, দিন বদল করো’ মঞ্চের রিমঝিমেরা। সেই ডাকে প্রচুর মানুষ পথে নেমেছিলেন। কলকাতা ছাড়িয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মেয়েরা ‘রাত দখলে’ নেমেছিলেন। সেই কর্মসূচির আহ্বায়কেরা এ বার নতুন কর্মসূচির কথা জানালেন।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে রিমঝিমেরা জানান, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর রাতে সকলে পথে নামবেন আবার। কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘শাসকের ঘুম ভাঙাতে নতুন গানের ভোর’। এই কর্মসূচির কথা বলতে গিয়ে রিমঝিমেরা সত্যজিৎ রায়ের ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ ছবির উল্লেখ করেছেন। তাঁরা জানান, গুপী গাইন যেমন রাজার ঘুম ভাঙিয়েছিলেন, সে ভাবেই শাসকদের ঘুম ভাঙাতে চান। সাংস্কৃতিক আঙ্গিকে রাত দখল হবে বলেও জানান রিমঝিমেরা। গানের দল, নাচের দল, সাংস্কৃতিক জগতের বিভিন্ন ব্যক্তিত্বকে এই কর্মসূচিতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
গত ৯ অগস্ট ভোরে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের সেমিনার রুম থেকে এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তার পর কেটে গিয়েছে ২৫ দিনের বেশি। সিবিআই তদন্ত করছে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি রয়েছে। ঠিক তার আগের রাতেই পথে নামবেন আন্দোলনকারীরা।
গত ১০ অগস্ট রাতে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে প্রথম মেয়েদের রাত দখলের আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী রিমঝিম। স্বাধীনতার মধ্যরাতে নারী স্বাধীনতার জন্য ‘মেয়েরা রাত দখল করো’ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল প্রথমে শহরের তিন জায়গায়। অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস, যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ড এবং কলেজ স্কোয়্যার। সেই ডাকে সাড়া দিয়েছিল কার্যত গোটা বাংলা। রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছিল আন্দোলন। ভোর পর্যন্ত পথে ছিলেন প্রতিবাদীরা। গান, মিছিল, স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছিল বাংলা। রিমঝিমেরা আশাবাদী, তাঁদের ডাকে আবারও বাংলা সরব হবে। সাধারণ নাগরিক পা মেলাবেন, গলা ফাটাবেন বিচারের দাবিতে।