পুলিশের ১৬৩ ধারার নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স। দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়ে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার ‘দ্রোহের কার্নিভাল’ থেকে অশান্তি ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ। সেই আশঙ্কা থেকেই রানি রাসমণি রোড এবং আশপাশের রাস্তায় জমায়েত রুখতে ১৬৩ ধারা জারি করেছে কলকাতা পুলিশ। সেই নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স। দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়ে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তাঁরা। জরুরি ভিত্তিতে বেঞ্চ বসানোর জন্য আবেদন জানান তাঁরা। সেই আর্জি মঞ্জুরও করেছেন প্রধান বিচারপতি।
জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স-এর আবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবারই বসছে হাই কোর্টের বিশেষ বেঞ্চ। বিচারপতি রবিকিশন কপূরের বেঞ্চে দুপুর ২টো নাগাদ মামলাটির শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
মঙ্গলবার কলকাতায় জোড়া কার্নিভাল রয়েছে। একটি সরকারের। রেড রোডে পুজোর কার্নিভাল। অন্যটি আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে। দ্রোহের কার্নিভাল। সেটিও রেড রোড লাগোয়া রানি রাসমণি রোডে আয়োজনের ডাক দেওয়া হয়েছে। প্রায় একই সময়ে শুরু হওয়ার কথা দু’টি। পুজোর কার্নিভাল বিকেল সাড়ে চারটের সময়। দ্রোহের কার্নিভালের জন্য বিকেল চারটে থেকে জমায়েত শুরু হওয়ার কথা।
কিন্তু কলকাতা পুলিশের তরফে ইতিমধ্যে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, রানি রাসমণি রোড এবং আরও কিছু রাস্তায় জমায়েতে নিষেধাজ্ঞার কথা। মধ্য কলকাতার মোট ৯টি জায়গাকে চিহ্নিত করে মঙ্গলবার ১৬৩ ধারা জারি করেছে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ বর্মা ওই নির্দেশিকায় জানিয়েছেন, দ্রোহের কার্নিভালের কারণে পুজোর কার্নিভালে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অশান্তি ছড়ানোরও আশঙ্কা করছেন তিনি। এমন অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা জারির সিদ্ধান্ত পুলিশের।
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েই সিনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স মঙ্গলবার ‘দ্রোহের কার্নিভাল’-এর ডাক দিয়েছে। কিন্তু তাতে পুলিশের তরফে কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। এর আগে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থও চিকিৎসক সংগঠনকে ইমেল পাঠিয়ে অনুরোধ জানিয়েছিলেন দ্রোহের কার্নিভাল প্রত্যাহার করার জন্য। ত্রিধারাকাণ্ডে অভিযুক্তদের জামিন দেওয়ার সময় কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল, পুজোর কার্নিভালে কোনও ভাবেই বিঘ্ন ঘটানো যাবে না। হাই কোর্টের ১১ অক্টোবরের ওই নির্দেশের কথাও ইমেলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। সোমবার রাতে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মাও নির্দেশিকার সঙ্গে হাই কোর্টের সেই দিনের নির্দেশের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
যদিও চিকিৎসক সংগঠনের তরফে এক বিবৃতিতে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আইন এবং হাই কোর্টের নির্দেশ মেনেই প্রতিবাদ চলবে। সরকার দ্রোহের কার্নিভাল প্রত্যাহার করতে বলায় সংগঠন যে হতাশ, সে কথাও জানানো হয়েছিল বিবৃতিতে।