প্রযোজনা সংস্থা শুরুর পর জুটির প্রথম ছবি ছিল ‘সেন্টিমেন্টাল’। চলতি বছরে জানুয়ারি মাসে মুক্তি পায় ছবিটি। সেই ছবি এ বার ছোট পর্দায় মুক্তির অপেক্ষায়। তার পর প্রযোজক হিসেবে আরও দু’টি ছবির ঘোষণা করেছেন যশ দাশগুপ্ত এবং নুসরত জাহান। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানালেন প্রযোজক দম্পতি।
গত কয়েক বছরে বাংলায় মূল ধারার বাণিজ্যিক ছবি কোণঠাসা। সেখানে ‘সেন্টিমেন্টাল’-এর মাধ্যমে বাণিজ্যিক ছবিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন যশ এবং নুসরত। সেই প্রয়াস কি সফল হয়েছে? যশ বললেন, ‘‘ব্যবসার দিক থেকে বলতে পারি, প্রথম সপ্তাহে আমাদের কালেকশন খুবই ভাল ছিল। আমি আর নুসরত, দু’জনেই খুশি ছিলাম। কিন্তু, দ্বিতীয় সপ্তাহে হিন্দি ছবি ‘ফাইটার’ মুক্তি পায়। লড়াইয়ে টিকে থাকতে পারিনি।’’ নুসরতের মতে, তার পরেও রাজ্যের সিঙ্গল স্ত্রিন থেকে তাঁরা খুব ভাল প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন। যশের কথায়, ‘‘সিঙ্গল স্ক্রিনের ব্যবসার সঠিক হিসেব সব সময়ে প্রকাশ্যে আসে না। কিন্তু, আমরা খুব ভাল প্রতিক্রিয়া পেয়েছি।’’
প্রথম প্রযোজনা যশ-নুসরতকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। অন্যের ছবিতে অভিনয় করার পরিবর্তে নিজের প্রযোজিত ছবিতে অভিনয় করার দায়িত্ব কি বেশি? নুসরত বললেন, ‘‘দুটোই সমান দায়িত্ব। একই রকম চাপ থাকে। সিনেমা তো সকলে মিলেই তৈরি করে। এটুকু বলতে পারি, প্রথম প্রযোজনার স্বাদটা তেতো মনে হয়নি। বরং তা নতুন কাজ করার সাহস জুগিয়েছে।’’
অভিনেতা যখন প্রযোজক হন, সেখানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী? নুসরতের মতে, ছবি তৈরির সম্পূর্ণ প্রক্রায়াটিই চ্যালেঞ্জিং। বললেন, ‘‘ছবির ভাবনা মাথায় আসা থেকে শুরু করে মুক্তির পরেও সেটা রয়ে যায়।’’ যশ যোগ করলেন, ‘‘মুক্তির পর সিনেমা হলের ব্যবসা, টিভি এবং ওটিটির স্বত্ব— আমার তো মনে হয়, একটি ছবিকে নিয়ে প্রযোজকের সফর কয়েক বছরের হতে পারে।’’
যশ নুসরতের সংস্থা থেকে আসছে জিৎ চক্রবর্তী পরিচালিত ‘আড়ি’ এবং রাজর্ষি দে পরিচালিত ছবি ‘ও মন ভ্রমণ’। দ্বিতীয় ছবিটির শুটিং সারতে শীঘ্রই ইউনিট পাড়ি দেবে তাইল্যান্ডে। অন্য দিকে ১২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে ‘আড়ি’র শুটিং। বছর দু’য়েক আগে মাকে হারিয়েছেন যশ। মা ও ছেলের সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে তৈরি এই ছবি যে তাঁর মায়ের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য, সে কথাও আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে স্পষ্ট করলেন অভিনেতা। বললেন, ‘‘কাছের কাউকে হারানোর পর আমরা বুঝতে পারি, কত কথা বাকি রয়ে গিয়েছে। সেই ভাবনা থেকেই ছবিটা তৈরি করছি।’’ নুসরত বললেন, ‘‘মা ও সন্তানের মধ্যে যে ভালবাসা এবং স্নেহের সম্পর্ক, এই ছবি সেটাকেই তুলে ধরবে।’’
এই ছবিতে অ্যাকশনের পাশাপাশি অন্য ভাবেও ধরা দিতে চলেছেন যশ। তবে এখনই এই প্রসঙ্গে বাড়তি কোনও তথ্য খোলসা করতে রাজি নন অভিনেতা। এই ছবিতে যশের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করবেন মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে রাজি করানো কতটা কঠিন ছিল? নুসরত হেসে বললেন, ‘‘সবটাই আমাদের পরিচালক করেছেন। এত ভাল চিত্রনাট্য শুনিয়েছিলেন যে, দিদি রাজি হয়েছেন।’’ মৌসুমীর মতো অভিনেত্রী তাঁদের ছবিতে অভিনয় করাটা যশ-নুসরতের কাছে গর্বের বিষয়। ভবিষ্যতে যে নতুন প্রতিভাদের মঞ্চ দেওয়ার তাঁদের প্রচেষ্টা জারি থাকবে, সে কথাও জানাতে ভুললেন না তাঁরা।