অবসাদগ্রস্ত মানুষের খোঁজ নেয় ক’জন? প্রশ্ন তুললেন শ্রীলেখা মিত্র। বহু বার অবসাদ নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী। আরও এক বার এই একই বিষয় নিয়ে সরব তিনি। তবে এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে একাধিক বার কটাক্ষের শিকার হয়েছেন অভিনেত্রী। অবসাদ নিয়ে প্রশ্ন করতেই তাই শ্রীলেখার বক্তব্য, “অনেক আগে এই নিয়ে কথা বলেছিলাম। তখন আমাকে পাগল বলা হয়েছিল।”
বৃহস্পতিবার সমাজমাধ্যমে দৈহিক গঠন নিয়ে কটূক্তি করার যে প্রবণতা তাতে ইতি টানার অনুরোধ জানিয়েছেন শ্রীলেখা। পোস্টের শুরুতেই লিখেছেন, “বহু ক্ষেত্রে অবসাদেও মানুষ মোটা হয়। আমি নিজেই জলজ্যান্ত উদাহরণ। খোঁজ নিয়েছেন কখনও, মানুষটা কেমন আছেন?” কিন্তু হঠাৎ কেন এই পোস্ট? আনন্দবাজার অনলাইনকে শ্রীলেখা বলেন, “এক অভিনেত্রীর নাম নিতে চাই না কারণ বিষয়টি নিয়ে বেশি আলোচনা হবে। সেই অভিনেত্রীর চেহারায় পরিবর্তন এসেছে বলে যে ভাবে ট্রোল করা হচ্ছে! এটা যে একজন অভিনেত্রীর উপরে কত বড় চাপ হতে পারে। আমরা নিজেরাও তো দশ বছর আগের ছবি দেখে ভাবি, ইস! কী সুন্দর দেখতে ছিলাম। মানুষ তো এক রকম থাকে না। বয়সের সঙ্গে বাহ্যিক সৌন্দর্য বদলায়।”
বয়স হয়ে গেলে তথাকথিত সৌন্দর্য ধরে রাখতে অনেকে কড়া ডায়েট মেনে চলেন ঠিকই। কিন্তু ভবিষ্যতে এর বড় প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন শ্রীলেখা। অভিনেত্রীর দাবি, হলিউডের ঠিক করে দেওয়া সৌন্দর্যের সংজ্ঞা বলিউড অনুসরণ করতে চায়। আর বলিউডকে অনুসরণ করে এই টলিউড।শ্রীলেখার মতে, “নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকে নিজেকে ভালবাসে। নিজেদের ছবি দেখতে পছন্দ করে। আর আমাদের জগতে ছবি, সৌন্দর্য এগুলো তুলে ধরা হয়। লোকে ভাবে, এরা সাজগোজ করে আবার টাকাও পাচ্ছে। তাই আমাদের সরাসরি আক্রমণ করা হয়।”
অবসাদ প্রসঙ্গে শ্রীলেখা জানান, মানসিক অসুস্থতা চিহ্নিত করা খুব প্রয়োজন। প্রথম বার চিকিৎসক পর্যন্ত পৌঁছনোই বিরাট একটা কঠিন কাজ। তাঁর কথায়, “কিছু মানুষের অসুস্থতা ধরা পড়ছে। কিন্তু এই অসুস্থতা ধরা না পড়লে আরও মারাত্মক আকার নিতে পারে। আমি নিজে অবসাদে ভুগছি, সেটা জানতেই সময় লেগে গিয়েছিল। বিচ্ছেদের পরে যখন নতুন করে জীবন শুরু করার চেষ্টা করছি, দেখলাম বিছানা থেকে উঠতে পারছি না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় বসে থাকতাম। বুঝলাম, চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। জীবনটা তো রূপকথা নয়। নিজেকেই নিজের দেখভাল করতে হবে।”
শ্রীলেখা জানান, তিনি চিকিৎসা করিয়েছেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ এখনও মেনে চলেন। অভিনেত্রীর কথায়, “এটা যে কোনও মানুষের হতে পারে। আর মানসিক অসুস্থতা বা অবসাদের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। চেহারায় পরিবর্তন আসে। মানসিক অসুস্থতা নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন। এই নিয়ে ছুতমার্গ থাকা উচিত নয়।”